ইশা জাহান নুসরাত
"সেই ভয়ানক রাতটি "
গতকাল খালুজীর মৃত্যু খবর শোনার পর থেকেই মনটা খুব খারাপ ৷
কেন যেন নানুর কথা খুব মনে পড়ছে৷ খুব কাছে থেকেই তার শেষ কীর্তিগুলো দেখেছিলাম ৷
প্রিয় মানুষগুলো কেন যেন এত তাড়াতাড়ি হারিয়ে যায়! নানু ছিলেন যুগের মহিয়সী রমণীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ একজন ৷ তার কথা মনে পড়লেই আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণের ঝড় ওঠে ৷ কলিজা ফেটে কান্না আসে ৷ তার কথাই আজ লিখবো ৷
তখন আলিম প্রথম বর্ষের বার্ষিক পরীক্ষা চলছে ৷
সব পরীক্ষা ঠিকঠাকভাবেই সম্পন্ন হলো আর মাত্র একটি পরীক্ষা বাকি ৷
রাত জেগে পড়ছিলাম আমি ৷
চারিদিক কেমন শান্ত। নীরব,নিস্তব্ধতায় ছেয়ে আছে ৷ চাঁদটা আবছা আলো দিয়ে যাচ্ছে ৷
জোনাকিগুলো রাতের প্রদীপ হয়ে ঝিকিমিকি জ্বলছিলো। যেন ওরা রাতের প্রহরী ৷ যাতে করে কোন পথহারা তাদের আলোয় পথের দিশা খুঁজে পায় ৷ অদূরে ঝিঁঝিঁ পোকাদের ডাক রাতের নির্জনতাকে আরো গভীর করে দিচ্ছে ৷
চাঁদের স্নিগ্ধ আলো , ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক আর জোনাকিদের ঝিকিমিকি বাতির মিশ্রণে প্রকৃতি এক অপূর্ব সৌন্দর্য্যের ঝলকানী দিচ্ছে ৷
আম্মু এখনো ঘুমাননি ৷ কেবল এপাশ-ওপাশ করছেন৷ মনে হচ্ছে তিনি কিসের জন্য যেন ছটফট করছেন ৷
প্রকৃতির এই মিলন-আভা তার মনে সান্ত্বনা দিতে পারছেনা ৷
আমি আবার পড়ায় মন দিলাম ৷
ক্ষাণিকপর আম্মুর মুঠোফোনটা বেজে ওঠলো ৷
হুড়মুড় করে উঠে তিনি ফোনটা রিসিভ করলেন ৷
মনে হচ্ছিলো যেন তিনি এরই অপেক্ষায় নির্ঘুম রজনী কাটাচ্ছিলেন ৷
কেন যেন নানুর কথা খুব মনে পড়ছে৷ খুব কাছে থেকেই তার শেষ কীর্তিগুলো দেখেছিলাম ৷
প্রিয় মানুষগুলো কেন যেন এত তাড়াতাড়ি হারিয়ে যায়! নানু ছিলেন যুগের মহিয়সী রমণীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ একজন ৷ তার কথা মনে পড়লেই আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণের ঝড় ওঠে ৷ কলিজা ফেটে কান্না আসে ৷ তার কথাই আজ লিখবো ৷
তখন আলিম প্রথম বর্ষের বার্ষিক পরীক্ষা চলছে ৷
সব পরীক্ষা ঠিকঠাকভাবেই সম্পন্ন হলো আর মাত্র একটি পরীক্ষা বাকি ৷
রাত জেগে পড়ছিলাম আমি ৷
চারিদিক কেমন শান্ত। নীরব,নিস্তব্ধতায় ছেয়ে আছে ৷ চাঁদটা আবছা আলো দিয়ে যাচ্ছে ৷
জোনাকিগুলো রাতের প্রদীপ হয়ে ঝিকিমিকি জ্বলছিলো। যেন ওরা রাতের প্রহরী ৷ যাতে করে কোন পথহারা তাদের আলোয় পথের দিশা খুঁজে পায় ৷ অদূরে ঝিঁঝিঁ পোকাদের ডাক রাতের নির্জনতাকে আরো গভীর করে দিচ্ছে ৷
চাঁদের স্নিগ্ধ আলো , ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক আর জোনাকিদের ঝিকিমিকি বাতির মিশ্রণে প্রকৃতি এক অপূর্ব সৌন্দর্য্যের ঝলকানী দিচ্ছে ৷
আম্মু এখনো ঘুমাননি ৷ কেবল এপাশ-ওপাশ করছেন৷ মনে হচ্ছে তিনি কিসের জন্য যেন ছটফট করছেন ৷
প্রকৃতির এই মিলন-আভা তার মনে সান্ত্বনা দিতে পারছেনা ৷
আমি আবার পড়ায় মন দিলাম ৷
ক্ষাণিকপর আম্মুর মুঠোফোনটা বেজে ওঠলো ৷
হুড়মুড় করে উঠে তিনি ফোনটা রিসিভ করলেন ৷
মনে হচ্ছিলো যেন তিনি এরই অপেক্ষায় নির্ঘুম রজনী কাটাচ্ছিলেন ৷
ফোনটা রিসিভ করতেই দেখলাম তার অপরূপ মায়াবী চেহারাটা কেমন যেন মলিন হয়ে গেলো ৷ তিনি খুব জোরেসোরেই 'ইন্নানিল্লাহ ' বললেন ৷
আর কোথাকার একটা স্রোতের প্রবল ঢেউ এসে তার গণ্ডদেশ ভাসিয়ে দিচ্ছিলো ৷ কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলছেন যেন ৷
আর কোথাকার একটা স্রোতের প্রবল ঢেউ এসে তার গণ্ডদেশ ভাসিয়ে দিচ্ছিলো ৷ কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলছেন যেন ৷
আম্মুর বিবর্ণ চেহারা দেখে শঙ্কিত হয়ে আমি উঠে আম্মুর কাছে গেলাম ৷ বললাম কী হয়েছে আম্মু? জবাবে আম্মু যা বললেন তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলামনা ৷ ঘটনাটি হচ্ছে, এশার নামায পড়ে অত্যন্ত খোশ মেজাজে খালামনি ও খালুর সাথে ঢাকায় আরেক খালামনির বাসায় যাচ্ছিলেন আমার নানু ৷
রাস্তা সম্পূর্ণ ফাঁকা নীরব এবং কোলাহলমুক্ত ৷ তখনই রাস্তা পার হবার সময় হঠাৎ করেই কোত্থেকে যেন এক ভয়ানক দানব গাড়ী পিশাচের ন্যায় এগুতে থাকলো নানুর দিকে ৷ গাড়ীটা দূরে থাকতেই নানু দ্রুত রাস্তা পার হতে চেয়েছিলেন তবুও তার শেষ রক্ষা হলোনা ৷
দানব গাড়িটি তেড়ে এসে স্বজোরে নানুকে ধাক্কা মারলো ৷
বিকট এক আওয়াজ হলো আর নানু দূর বহুদূরে ছিটকে পড়লেন ৷
আজরাইল এসে নানুর প্রাণপাখিটাও ছিনিয়ে নিলো ৷
মুহূর্তেই তার দেহখানা নিথর, শান্ত এবং চুপসে গেলো ৷ মনে হচ্ছিলো গাড়িটা কেবলমাত্র নানুকে ধাক্কা মারার জন্যই এসেছিলো ৷
রাস্তা সম্পূর্ণ ফাঁকা নীরব এবং কোলাহলমুক্ত ৷ তখনই রাস্তা পার হবার সময় হঠাৎ করেই কোত্থেকে যেন এক ভয়ানক দানব গাড়ী পিশাচের ন্যায় এগুতে থাকলো নানুর দিকে ৷ গাড়ীটা দূরে থাকতেই নানু দ্রুত রাস্তা পার হতে চেয়েছিলেন তবুও তার শেষ রক্ষা হলোনা ৷
দানব গাড়িটি তেড়ে এসে স্বজোরে নানুকে ধাক্কা মারলো ৷
বিকট এক আওয়াজ হলো আর নানু দূর বহুদূরে ছিটকে পড়লেন ৷
আজরাইল এসে নানুর প্রাণপাখিটাও ছিনিয়ে নিলো ৷
মুহূর্তেই তার দেহখানা নিথর, শান্ত এবং চুপসে গেলো ৷ মনে হচ্ছিলো গাড়িটা কেবলমাত্র নানুকে ধাক্কা মারার জন্যই এসেছিলো ৷
খালামনি আর খালু রাস্তা পার হয়েই আশেপাশে এবং পেছনে ফিরে দেখলেন তাদের প্রধান অতিথি নেই!
তারা দিশেহারা হয়ে খুঁজতে লাগলেন ৷
খুঁজতে খুঁজতে এক পর্যায়ে অনেক দূরে গিয়ে দেখেন কালো কাপড়ে আবৃতা কে যেন রাস্তার মাঝে শুয়ে আছে ৷
তারা তখনো কল্পনায়ও আনতে পারেননি, কিছুক্ষণ আগের বিকট আওয়াজটিই তাদের জন্য বিপদ সংকেত ছিলো ৷
তারা দিশেহারা হয়ে খুঁজতে লাগলেন ৷
খুঁজতে খুঁজতে এক পর্যায়ে অনেক দূরে গিয়ে দেখেন কালো কাপড়ে আবৃতা কে যেন রাস্তার মাঝে শুয়ে আছে ৷
তারা তখনো কল্পনায়ও আনতে পারেননি, কিছুক্ষণ আগের বিকট আওয়াজটিই তাদের জন্য বিপদ সংকেত ছিলো ৷
রাস্তার উপর শুয়ে থাকা মানুষটির উপর তাদের দয়া হলো ৷ আহা এখন একটা গাড়ি এলে তো পিষে ফেলবে কে লোকটি? কেন শুয়ে আছে? নিশ্চয়ই কোন অসহায় বা পাগল কেউ হবে!
দুজন মিলে তাকে এপাশ করালো এবং অন্ধকার রাতের আবছা চাঁদের আলোয় চেহারাটা তেমন বুঝা যাচ্ছিলোনা ৷
ভালো করে লক্ষ্য করতে গিয়ে যখন দেখলো বিভৎস রক্তাক্ত চেহারাটা পরিচিত লাগছে! তখনই এক নযর দেখেই স্বজোরে চিৎকার! তারা রোনাজারী করে বলতে লাগলেন-
হায়! হায়! এ যে আমাদের মা!
এখানে এলো কী করে! কেনইবা এভাবে শুয়ে আছেন!
মা মা বলে বারবার ডাকছেন!
কিন্তু,,,
নানুর এখন আর রাস্তা পার হবার তাড়া নেই ৷ কারো ডাকে সাড়া দেয়ার সময় নেই ৷ এক্সিডেন্ট হয়ে যাওয়ার ভয় নেই ৷ সম্পূর্ণ নির্ভয়ে স্বন্তর্পণেই হাইওয়ের উপর ঘুমিয়ে আছেন ৷ মনে হচ্ছে জনমের ঘুম ঘুমাচ্ছেন ৷
ভালো করে লক্ষ্য করতে গিয়ে যখন দেখলো বিভৎস রক্তাক্ত চেহারাটা পরিচিত লাগছে! তখনই এক নযর দেখেই স্বজোরে চিৎকার! তারা রোনাজারী করে বলতে লাগলেন-
হায়! হায়! এ যে আমাদের মা!
এখানে এলো কী করে! কেনইবা এভাবে শুয়ে আছেন!
মা মা বলে বারবার ডাকছেন!
কিন্তু,,,
নানুর এখন আর রাস্তা পার হবার তাড়া নেই ৷ কারো ডাকে সাড়া দেয়ার সময় নেই ৷ এক্সিডেন্ট হয়ে যাওয়ার ভয় নেই ৷ সম্পূর্ণ নির্ভয়ে স্বন্তর্পণেই হাইওয়ের উপর ঘুমিয়ে আছেন ৷ মনে হচ্ছে জনমের ঘুম ঘুমাচ্ছেন ৷
দিশেহারা হয়ে গেলেন সকলে ৷
এটা কী করে সম্ভব! তিনি তো আমাদের মাঝেই কারো হাত ধরে ছিলেন ৷ তবে ছিটকে গেলেন কী করে!
তাদের এবার কিছুক্ষণ আগের ঘটে যাওয়া বিকট আওয়াজের কথা স্মরণে এলো!
এটা কী করে সম্ভব! তিনি তো আমাদের মাঝেই কারো হাত ধরে ছিলেন ৷ তবে ছিটকে গেলেন কী করে!
তাদের এবার কিছুক্ষণ আগের ঘটে যাওয়া বিকট আওয়াজের কথা স্মরণে এলো!
নিথর দেহ দেখেও কারো বিশ্বাস হচ্ছিলোনা, তার দেহে যে প্রাণপাখিটা আর নেই ৷ তাই তাড়াহুড়ো করেই ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলেন তারা ৷ হাসপাতালে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করলেন ৷ বললেন ময়নাতদন্ত করতে হবে ৷
খালামনিরা এসব ব্যাপারে বোঝেন কম ৷
খালামনিরা এসব ব্যাপারে বোঝেন কম ৷
শুরু হলো আহাজারি, বিলাপ ৷ কে কাকে সামলাবে! এই মাঝরাতে কোথায় পাবে একগুচ্ছ সান্ত্বনার বানী এবং শীতল পরশ বুলানো হাত !
এ সবটা ঘটনা আম্মুকে ফোনে জানানো হলো ৷
ময়নাতদন্ত সম্পর্কে তাদেরকে সাময়িক ধারণা দিলাম এবং বললাম নানুকে যেন কোনভাবেই তা করাতে না পারে ৷ নয়তো খুব সর্বনাশ হয়ে যাবে!
ময়নাতদন্ত সম্পর্কে তাদেরকে সাময়িক ধারণা দিলাম এবং বললাম নানুকে যেন কোনভাবেই তা করাতে না পারে ৷ নয়তো খুব সর্বনাশ হয়ে যাবে!
আম্মু এসব শুনেই যায় যায় অবস্থা৷ তার আর্তচিৎকারে ধ্বনিত হলো চারিদিক ৷ মা, মা বলে সে কী আহাজারী !
আম্মু ছিলেন নানুর ৭জন সন্তানের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় সন্তান ৷
আম্মু ছিলেন নানুর ৭জন সন্তানের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় সন্তান ৷
যেমনটা ছিলেন হযরত ইউসুফ আ. হযরত ইয়াকুব আ. এর নিকট ৷
পুরো বাসায় আমি আর আম্মু ছাড়া আর কেউ ছিলোনা ৷ আম্মুর এই গগনবিদারী কান্নায় আমার হৃদয় ভেঙ্গেচুরে চুরমার হয়ে যাচ্ছিলো ৷ তার এই বুকচেরা কান্না রাতের নিস্তব্ধতাকে গ্রাস করছিলো ৷
চাঁদটাও যেন আলো দিতে ভুলে যাচ্ছিলো ৷ জোনাকিদের ঝিকিমিকি আলো যেন ক্রমশ ফিকে হয়ে যাচ্ছিলো ৷ ঝিঁঝিঁপোকাগুলো সব যেন নীরব হয়ে আম্মুর আহাজারীতে মশগুল হয়ে আছে ৷
প্রকৃতি যেন বিষাদের এক ঘনঘটা কালো ছায়ায় আচ্ছাদিত হয়ে আছে ৷ সবকিছু কেমন যেন ধুম ধরে আছে ৷
মহল্লার লোকজন জাগ্রত হয়ে দরজায় করাঘাত করতে লাগলো ৷
আমি দিশেহারা ব্যাকুল হয়ে গিয়েছিলাম ৷ আম্মুকে সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম ৷
তাকে বুকে নিয়ে সান্ত্বনার পরশ বুলাতে চেয়েছিলাম৷ কিন্তু তার অন্তর্জ্বালায় আমারও কলিজা পুড়ে ছাই ছাই হয়ে যাচ্ছিলো ৷
আমি কী করবো, কী দিয়ে আম্মুর এ ব্যথা, এ দহন প্রশমিত করবো, কিছুই পাচ্ছিলামনা ৷
মা হারানো ব্যথা কতোটা কষ্টের কতোটা যন্ত্রণাদায়ক, তা আমি সেদিন হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলাম ৷
চাঁদটাও যেন আলো দিতে ভুলে যাচ্ছিলো ৷ জোনাকিদের ঝিকিমিকি আলো যেন ক্রমশ ফিকে হয়ে যাচ্ছিলো ৷ ঝিঁঝিঁপোকাগুলো সব যেন নীরব হয়ে আম্মুর আহাজারীতে মশগুল হয়ে আছে ৷
প্রকৃতি যেন বিষাদের এক ঘনঘটা কালো ছায়ায় আচ্ছাদিত হয়ে আছে ৷ সবকিছু কেমন যেন ধুম ধরে আছে ৷
মহল্লার লোকজন জাগ্রত হয়ে দরজায় করাঘাত করতে লাগলো ৷
আমি দিশেহারা ব্যাকুল হয়ে গিয়েছিলাম ৷ আম্মুকে সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম ৷
তাকে বুকে নিয়ে সান্ত্বনার পরশ বুলাতে চেয়েছিলাম৷ কিন্তু তার অন্তর্জ্বালায় আমারও কলিজা পুড়ে ছাই ছাই হয়ে যাচ্ছিলো ৷
আমি কী করবো, কী দিয়ে আম্মুর এ ব্যথা, এ দহন প্রশমিত করবো, কিছুই পাচ্ছিলামনা ৷
মা হারানো ব্যথা কতোটা কষ্টের কতোটা যন্ত্রণাদায়ক, তা আমি সেদিন হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলাম ৷
সেদিন থেকে সবসময় দুআ করি মাবুদ গো তুমি আমাকে আম্মুর মৃত্যু দেখার আগেই তোমার দরবারে নিয়ে যেও ৷ আমি মাহারা কষ্ট সইতে পারবো না গো মাওলা!
রাতেই ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে নানু বিয়োগের ঘটনা সবাইকে জানান দেয়া হলো ৷
পরদিন আমার শেষ পরীক্ষা, একদিকে আম্মু, অপরদিকে পরীক্ষা। কোনটাকেই ছাড়তে মন চাইছিলোনা ৷ আম্মুকে বহুকষ্টে বুঝিয়ে বললাম, কেবল পাশ নাম্বারটা উঠলেই আমি খাতা দিয়ে চলে আসবো ৷
পরদিন আমার শেষ পরীক্ষা, একদিকে আম্মু, অপরদিকে পরীক্ষা। কোনটাকেই ছাড়তে মন চাইছিলোনা ৷ আম্মুকে বহুকষ্টে বুঝিয়ে বললাম, কেবল পাশ নাম্বারটা উঠলেই আমি খাতা দিয়ে চলে আসবো ৷
পরীক্ষা দিতে গিয়ে সৃজনশীল মাত্র এক নম্বরের উত্তর লিখছিলাম। তখনই একজন স্যার এসে বললেন- তোমার পরীক্ষা দিতে হবেনা ৷ তোমার আম্মু বলেছে তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে, এই বলে খাতাটা নিয়ে গেলেন ৷ আমি নির্বাক! পরীক্ষা আর দেয়া হলোনা ৷
নানুকে গ্রামের বাড়ি নেওয়া হলো ৷ নানুর অনেক বড় আওলাদ সবাই গিয়েছে শেষবারের মতো এ মহিয়সী নারীর বদনখানি এক নযর দেখে নিতে ৷ গেলাম আমরাও ৷
নানুকে দেখে সেদিন নিজেকে আর স্থির রাখতে পারলামনা ৷
আমি নিজেকে বিশ্বাস করাতে পারলামনা যে, এটা একটা লাশ! যার সাথে দুদিন আগে কথাও হয়েছে। তারও কিছুদিন আগে দেখা হয়েছিলো! হয়েছিলো কত খুনসুঁটি ৷
নানুকে দেখে সেদিন নিজেকে আর স্থির রাখতে পারলামনা ৷
আমি নিজেকে বিশ্বাস করাতে পারলামনা যে, এটা একটা লাশ! যার সাথে দুদিন আগে কথাও হয়েছে। তারও কিছুদিন আগে দেখা হয়েছিলো! হয়েছিলো কত খুনসুঁটি ৷
খাটিয়ার পাশে অনেকক্ষণ বসে ছিলাম ৷ চুপটি হয়ে কেবল তাকিয়েই ছিলাম ৷ জানিনা তখন আমার কী হয়েছিলো ৷
ক্ষাণিকপর পাশে গিয়ে নানুর হাত ধরলাম ৷
এ কি!
এই তো সেই হাতটিই ৷ যেটা ছিলো খুবই নরম কোমল এবং উষ্ণ গরম ৷ যে হাতটি ধরে এ পাড়া থেকে ও পাড়া ঘুরতাম, গল্প শুনতাম ৷ যে হাতের রান্না খাওয়ার জন্য মাদরাসা বন্ধ পড়লেই ছুটে যেতাম ৷
আজ তা পাথরের ন্যায় শক্ত এবং বরফের ন্যায় ঠাণ্ডা হয়ে আছে যে! নেড়েচেড়ে দেখলাম, নাহ কিছুতেই স্বাভাবিক হচ্ছেনা!
সেদিনই জীবনের প্রথম খুব কাছে থেকে লাশ দেখেছি এবং কাছে গিয়ে স্পর্শ করেছি। চুমু খেয়েছি!
না, একটুও ভয় পাইনি বরং কলিজায় একটা বিরাট পাথরের চাপ অনুভব করছিলাম ৷
ক্ষাণিকপর পাশে গিয়ে নানুর হাত ধরলাম ৷
এ কি!
এই তো সেই হাতটিই ৷ যেটা ছিলো খুবই নরম কোমল এবং উষ্ণ গরম ৷ যে হাতটি ধরে এ পাড়া থেকে ও পাড়া ঘুরতাম, গল্প শুনতাম ৷ যে হাতের রান্না খাওয়ার জন্য মাদরাসা বন্ধ পড়লেই ছুটে যেতাম ৷
আজ তা পাথরের ন্যায় শক্ত এবং বরফের ন্যায় ঠাণ্ডা হয়ে আছে যে! নেড়েচেড়ে দেখলাম, নাহ কিছুতেই স্বাভাবিক হচ্ছেনা!
সেদিনই জীবনের প্রথম খুব কাছে থেকে লাশ দেখেছি এবং কাছে গিয়ে স্পর্শ করেছি। চুমু খেয়েছি!
না, একটুও ভয় পাইনি বরং কলিজায় একটা বিরাট পাথরের চাপ অনুভব করছিলাম ৷
নানুকে ডাকলাম কয়েকবার মাথায় হাত বুলিয়ে, কিন্তু নানু রবের ডাকে সাড়াদানে এতোটাই মশগুল হয়ে গেছেন যে, আমার একটি ডাকেও সাড়া দেয়ার ফুরসত পাননি !
খালামনিরা একেকজন বেহুঁশের মতো হয়ে আছেন মাতৃহারা বেদনায়৷
পাশে দেখলাম বাইরে জানালার গ্রীল ধরে নানুর দিকে তাকিয়ে নীরবে ফুঁপিয়ে ফঁপিয়ে এক বৃদ্ধ চোখের নোনাজলে বুক ভাসিয়ে যাচ্ছেন ৷
তিনি আর কেউ নন, নানুরই জীবনসঙ্গী আমাদের নানাভাই ৷ তাদের দুজনের অনেক মহব্বত ছিলো ৷ তাদের এমন মহব্বত দেখে অনেকে ঈর্ষা করতো ৷
পাশে দেখলাম বাইরে জানালার গ্রীল ধরে নানুর দিকে তাকিয়ে নীরবে ফুঁপিয়ে ফঁপিয়ে এক বৃদ্ধ চোখের নোনাজলে বুক ভাসিয়ে যাচ্ছেন ৷
তিনি আর কেউ নন, নানুরই জীবনসঙ্গী আমাদের নানাভাই ৷ তাদের দুজনের অনেক মহব্বত ছিলো ৷ তাদের এমন মহব্বত দেখে অনেকে ঈর্ষা করতো ৷
এই প্রথম আমি স্বচক্ষে কোন পুরুষকে এভাবে স্ত্রীর বিয়োগ বেদনায় অঝোরে কাঁদতে দেখলাম ৷ তাও আবার এই বয়সে এসে !
নানুর সমস্ত শরীর কালো বোরকায় আবৃত ছিলো৷ পরণে ছিলো নতুন কাপড় ৷ আহা কী সৌভাগ্য আমার নানুর ৷ জীবনের শেষ পর্যায়ে এসেও আল্লাহর হুকুম থেকে গাফেল হননি ৷
নানু খুব পর্দানশীলা, অত্যন্ত পরহেজগার, নামাযী ও আমলী ছিলেন ৷
তার মতো মানুষ আমি এই নশ্বর পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি দেখিনি ৷ নানুর মতো অনেকটা আমার আম্মু হয়েছেন ৷৷
নানু খুব পর্দানশীলা, অত্যন্ত পরহেজগার, নামাযী ও আমলী ছিলেন ৷
তার মতো মানুষ আমি এই নশ্বর পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি দেখিনি ৷ নানুর মতো অনেকটা আমার আম্মু হয়েছেন ৷৷
কী মায়াবী চেহারা, সুঠাম দেহী এবং দেহময় নূরানী আভা ঝলকানী দিচ্ছিলো ৷
আম্মুরা ৫ বোন মিলেই নানুকে গোসল দিলেন ৷ শেষবারের মতো প্রাণের সবটুকুন ভালোবাসা আর সবটুকুন আবেগ দিয়ে মনমতো তাদের মাকে সাজালেন ৷
নানুর আওলাদগণই নানুকে জানাযা দিলেন ৷
আম্মুরা ৫ বোন মিলেই নানুকে গোসল দিলেন ৷ শেষবারের মতো প্রাণের সবটুকুন ভালোবাসা আর সবটুকুন আবেগ দিয়ে মনমতো তাদের মাকে সাজালেন ৷
নানুর আওলাদগণই নানুকে জানাযা দিলেন ৷
তার খাটিয়া যখন চিরকালের জন্য গোরস্তানের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো, তখনই দেখা দিলো ভিন্ন পরিবেশ ৷
হায়রে! এতো এতো আপনজন, এতো আওলাদ রেখে কেমন করে নানু একা থাকবেন?
তার ভয় করবেনা বুঝি! সকলের কলিজাফাটা গগনবিদারী কান্নায় পরিবেশটা কেমন ভারী হয়ে উঠেছিলো ৷
আম্মু তো নানুর সাথেই কবরে যেতে চলেছিলেন ৷ তাকে সামলানো বেশ মুশকিলই ছিলো ৷ পাগলপ্রায় হয়ে গিয়েছিলেন ৷ আবোল-তাবোল বকছিলেন ৷
ছোট খালামনি তো উঠানে বারবার বেঁহুশ হয়ে যাচ্ছিলেন ৷ অন্যদের অবস্থাও ছিলো বেশ আশঙ্কাজনক ৷ মোটকথা সবাই সেদিন নানুর বিরহ-বেদনার তীব্র জ্বালায় অাঙ্গার হয়ে যাচ্ছিলেন৷ নানু-ই ছিলেন পরিবারে সবার আশা ভরসা, পরিবারের মাথা ৷
নানুর জন্য তাদের বংশকে পাণ্ডিত্যের বংশ বলা হতো ৷
সবার কলিজার মনিকোঠায় ছিল তার বসবাস ৷
হায়রে! এতো এতো আপনজন, এতো আওলাদ রেখে কেমন করে নানু একা থাকবেন?
তার ভয় করবেনা বুঝি! সকলের কলিজাফাটা গগনবিদারী কান্নায় পরিবেশটা কেমন ভারী হয়ে উঠেছিলো ৷
আম্মু তো নানুর সাথেই কবরে যেতে চলেছিলেন ৷ তাকে সামলানো বেশ মুশকিলই ছিলো ৷ পাগলপ্রায় হয়ে গিয়েছিলেন ৷ আবোল-তাবোল বকছিলেন ৷
ছোট খালামনি তো উঠানে বারবার বেঁহুশ হয়ে যাচ্ছিলেন ৷ অন্যদের অবস্থাও ছিলো বেশ আশঙ্কাজনক ৷ মোটকথা সবাই সেদিন নানুর বিরহ-বেদনার তীব্র জ্বালায় অাঙ্গার হয়ে যাচ্ছিলেন৷ নানু-ই ছিলেন পরিবারে সবার আশা ভরসা, পরিবারের মাথা ৷
নানুর জন্য তাদের বংশকে পাণ্ডিত্যের বংশ বলা হতো ৷
সবার কলিজার মনিকোঠায় ছিল তার বসবাস ৷
জানিনা ওপারে কেমন আছেন ৷ তবে সবসময় রহমানের কাছে নানুর শান্তি কামনা করি ৷ তার আলেম, আলেমা হাফেজ এবং পরহেজগার ভাই-বোন, স্বামী ,সন্তান , নাতি-নাতনীদের ওসীলায় যেন আল্লাহ পাক তাকে বেহেশতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করেন৷
নানু মারা যাবার পর ওই বাড়িতে আর যাওয়া হয়না৷ কেমন যেন সবকিছু মৃত মৃত লাগে ৷
কোন কিছুতেই সজীবতার স্পন্দন খুঁজে পাইনা ৷ নেই আগের মতো সেই আনন্দ উল্লাস ৷ নেই আদরে গল্প শুনানোর এবং পিঠা খাওয়ানোর মতো কোন কল্পরানী ৷
কোন কিছুতেই সজীবতার স্পন্দন খুঁজে পাইনা ৷ নেই আগের মতো সেই আনন্দ উল্লাস ৷ নেই আদরে গল্প শুনানোর এবং পিঠা খাওয়ানোর মতো কোন কল্পরানী ৷
নানু মৃত্যুর সাথে সাথে ঐ বাড়ির গাছ-পালা পশ-ুপাখিরাও যেন নির্জীব হয়ে গেছে ৷
নেই, আর কিছুই নেই৷
এক ভয়াল রাতই আমাদের সবকিছু কেড়ে নিয়েছে।
নেই, আর কিছুই নেই৷
এক ভয়াল রাতই আমাদের সবকিছু কেড়ে নিয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন