বুধবার, ১০ জানুয়ারী, ২০১৮

অনুগল্প

আনিকা নওশিন

ছেলেটি ভীষণ বই প্রেমী, বেলায় অবেলায় মগ্ন থাকে বই পড়ায়। তার ছোট্ট একটা ঘর আছে, ঘরময় বইয়ে ভরা। ঘরে একটা দেয়াল ঘড়িও আছে, বই পড়ার সময় ঘড়ির নিয়ম মেনটেইন হয় না।
বইয়ের সাথে ডায়েরীবন্দি করা কিছু অনুভূতি আছে। অনুভূতির কল্পনা জুড়ে সুহাসিনীর বাস। বই পড়ার ফাঁকে সুহাসিনীর কল্পনায় সে ডুবে থাকে.... 
খুব সাধারণ তার চলাফেরা। বেশী কথা একদম পছন্দ নয় তার, হৈ হুল্লোরে তাকে খুঁজে পাওয়া ভীষণ দায়। গাদি গাদি বন্ধু নেই তার। পাড়ায় রং খেলার দিনও সে চুপচাপ পুকুর ঘাটে বসে থাকে। এখানেই সে সুহাসিনীর দেখা পেয়েছিলো।
সেদিন মন খারাপের মেঘগুলো নিয়ে যখন পুকুর ঘাটে এসে সবে বসেছে। অচমকা পুকুরের ওপাশে একটা মেয়ের খিলখিল হাসির শব্দে বিস্মিত হয়েছে। মেয়েটার সাথে চার-পাঁচটা বাচ্চা ররয়েছ, বাচ্চাগুলোও হাসছে। হাসতে হাসতে তারা মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে। বিচিত্রভাবে জীবন্ত সে হাসি। মেয়েটির হাসি দেখে সে নাম দেয় সুহাসিনী।



ক্লান্ত দুপুরে সবাই যখন ঘুমে থাকে। ছেলেটা তখন পুকুর ঘাটে বড় ছায়ায় ঘেরা গাছটার নিচে বসে সুহাসিনীর অপেক্ষা করে। ভাবতে থাকে কোন রাস্তার ঠিক কতটা গেলে সুহাসিনীর দেখা পাবে....
তার চেনা শহরে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হয়, একটা আর্তনাদ আস্তে আস্তে তার সমস্ত শরীরে বাসা বাঁধে। অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে একসময় ছেলেটা হাপিয়ে যায়, তার চোখদুটো তীব্র লাল হয়ে উঠে, দু্ফোটা জল তার চোখ গড়িয়ে মাটিতে পরার আগেই সে মুছে ফেলে!
নিজের ছোট্ট ঘরের জানালা তার খুব বেশি প্রিয়, জানালার পাশে বসে পুকুরটিকে দেখা যায়। কেঁটে যায় দিন সুহাসিনীর অপেক্ষায়.... 
সুহাসিনী কি পুকুরপাড়ে লুকিয়ে ছেলেটিকে দেখে? নাকি সবটাই তার অদেখা রয়ে যায়!


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নতুন লেখাগুলো পড়ুন...

      দুশ্চিন্তার চিকিৎসা   মূল: রশিদ আহমদ লুধিয়ানভি উর্দু: مفتی رشید احمد لدھیانوی ‎‎ জন্মঃ ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯২২ মৃত্যু...