মাহদী শেখ
মনোযোগের সাথে পড়ার চেষ্টা করছিলো ফাহাদ। আগামীকাল তার ইংরেজি প্রথম পত্র পরিক্ষা। পড়ালেখা নিয়ে খুবই ব্যস্ত সে। এমনি সময় কলিং বেলের আওয়াজ তার মনোযোগে বিঘ্ন ঘটালো। নিচে নেমে এলো কে এসেছে দেখতে। গেট খুলে কাউকে দেখতে পেল না।
ঘরে এসে পড়তে বসল সে।
পড়ায় একটু মনোযোগ এসেছে, আবারো কলিংবেলটা বেজে উঠলো। বিরক্ত হয়ে নিচে এসে এইবারো কাউকে দেখতে পেলো না। আশেপাশের লোকেরা জানালো এক দুষ্ট বাচ্চা কলিংবেল বাজিয়ে দৌড় দিয়েছে।
মেজাজ গরম করে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে যেতে যেতে ফাহাদের মাথায় একটা বুদ্ধি এলো। সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকলো। এইবার কলিংবেলটা বেজে উঠার সাথে সাথেই গেট খুলে এক পিচ্চিকে দৌড়াতে দেখল। পিচ্চিটার পিছে পিছে সেও দৌড়াতে শুরু করলো। পিচ্চি দুষ্টু বাচ্চাটা ফাহাদকে দৌড়ে আসতে দেখে পিছনে ফিরে ভেংচি কাটতে লাগলো।
দৌড়াতে দৌড়াতে বাচ্চাটা মেইন রোডে চলে এলো। তখনও বাচ্চাটা ফাহাদের দিকে তাকিয়ে ভেংচি কাটছিল। ফাহাদ ছেলেটিকে ইশারায় থামতে বলছিল বারবার। ঠিক তখনই একটা চলন্ত ট্রাক এসে ধাক্কা দিল বাচ্চাটাকে। একটু দূরে ছিটকে পরলো সে। মাথা ফেটে মগজ ছড়িয়ে পড়লেও চারিদিকে। কিছুক্ষণের মধ্যে রক্তক্ষরণে মারা গেল বাচ্চাটা।
মৃত্যুর দায় এড়াতে ফাহাদ চলে এলো সেখান থেকে। ফাহাদকে কেউ খেয়াল করেনি। বস্তির এক ছেলে রাস্তায় এক্সিডেন্ট করে মারা গেছে এটাই ভেবে নিল সবাই। বাসায় এসে পড়ায় মন বসানোর চেষ্টা করলো ফাহাদ। কিছুতেই পড়াতে মন বসাতে পারলো না। বাচ্চাটার মৃত্যুর জন্য নিজেকেই দায়ী করতে লাগলো সে। পরেরদিন পরিক্ষাটা খারাপ হলো তার।
এর কিছুদিন পর গভীর রাতে ফাহাদের বাসার কলিংবেলটা বেজে উঠলো। ফাহাদের বাবা ঘুম জড়ানো চোখে নিচে নেমে এলেন। কিন্তু গেট খুলে কাউকে দেখতে পেলেন না। কিছুক্ষণ পর আবার কলিংবেলটা বেজে উঠলো। এবার আর ফাহাদের বাবা নিচে নামলেন না। ভাবলেন কলিংবেলে কোনো সমস্যা হয়েছে, কালই বদলে নিবেন।
পরেরদিন ফাহাদের বাবা নতুন একটা কলিংবেল লাগালেন। কিন্তু সেদিন মধ্য রাতেও আগের মতো নতুন কলিংবেলটা বেজে উঠলো। কেউ বুঝতে পারছিলো না কলিংবেলের কী সমস্যা হয়েছে। তবে শুধু মাত্র একজনই বুঝেছিলো সবকিছু। সে হলো ফাহাদ। সে তার পরিবারকে জোরাজোরি করল বাসা পরিবর্তন করতে। অবশেষে ফাহাদের বাবা ফাহাদের কথায় রাজি হয়ে বাসা পাল্টালেন। তবে বাকী যে কয়দিন এ বাসায় ছিলেন, প্রতিদিন মধ্য রাতে কলিংবেলটা বেজে উঠতো।
ফাহাদরা বাসা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর থেকে সেই বাসার কলিংবেলটা মধ্যরাতে আর বেজে উঠে না। তবে ফাহাদের খোঁজে বিভিন্ন বাসায় মধ্যরাতে কেউ কলিংবেল বাজায়। এমনিভাবে একদিন মধ্যরাতে আপনাদের বাসার কলিংবেলটাও কিন্তু বেজে উঠতে পারে!
গল্প: কলিংবেল
লেখা: মাহদী শেখ
মনোযোগের সাথে পড়ার চেষ্টা করছিলো ফাহাদ। আগামীকাল তার ইংরেজি প্রথম পত্র পরিক্ষা। পড়ালেখা নিয়ে খুবই ব্যস্ত সে। এমনি সময় কলিং বেলের আওয়াজ তার মনোযোগে বিঘ্ন ঘটালো। নিচে নেমে এলো কে এসেছে দেখতে। গেট খুলে কাউকে দেখতে পেল না।
ঘরে এসে পড়তে বসল সে।
পড়ায় একটু মনোযোগ এসেছে, আবারো কলিংবেলটা বেজে উঠলো। বিরক্ত হয়ে নিচে এসে এইবারো কাউকে দেখতে পেলো না। আশেপাশের লোকেরা জানালো এক দুষ্ট বাচ্চা কলিংবেল বাজিয়ে দৌড় দিয়েছে।
মেজাজ গরম করে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে যেতে যেতে ফাহাদের মাথায় একটা বুদ্ধি এলো। সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকলো। এইবার কলিংবেলটা বেজে উঠার সাথে সাথেই গেট খুলে এক পিচ্চিকে দৌড়াতে দেখল। পিচ্চিটার পিছে পিছে সেও দৌড়াতে শুরু করলো। পিচ্চি দুষ্টু বাচ্চাটা ফাহাদকে দৌড়ে আসতে দেখে পিছনে ফিরে ভেংচি কাটতে লাগলো।
দৌড়াতে দৌড়াতে বাচ্চাটা মেইন রোডে চলে এলো। তখনও বাচ্চাটা ফাহাদের দিকে তাকিয়ে ভেংচি কাটছিল। ফাহাদ ছেলেটিকে ইশারায় থামতে বলছিল বারবার। ঠিক তখনই একটা চলন্ত ট্রাক এসে ধাক্কা দিল বাচ্চাটাকে। একটু দূরে ছিটকে পরলো সে। মাথা ফেটে মগজ ছড়িয়ে পড়লেও চারিদিকে। কিছুক্ষণের মধ্যে রক্তক্ষরণে মারা গেল বাচ্চাটা।
মৃত্যুর দায় এড়াতে ফাহাদ চলে এলো সেখান থেকে। ফাহাদকে কেউ খেয়াল করেনি। বস্তির এক ছেলে রাস্তায় এক্সিডেন্ট করে মারা গেছে এটাই ভেবে নিল সবাই। বাসায় এসে পড়ায় মন বসানোর চেষ্টা করলো ফাহাদ। কিছুতেই পড়াতে মন বসাতে পারলো না। বাচ্চাটার মৃত্যুর জন্য নিজেকেই দায়ী করতে লাগলো সে। পরেরদিন পরিক্ষাটা খারাপ হলো তার।
এর কিছুদিন পর গভীর রাতে ফাহাদের বাসার কলিংবেলটা বেজে উঠলো। ফাহাদের বাবা ঘুম জড়ানো চোখে নিচে নেমে এলেন। কিন্তু গেট খুলে কাউকে দেখতে পেলেন না। কিছুক্ষণ পর আবার কলিংবেলটা বেজে উঠলো। এবার আর ফাহাদের বাবা নিচে নামলেন না। ভাবলেন কলিংবেলে কোনো সমস্যা হয়েছে, কালই বদলে নিবেন।
পরেরদিন ফাহাদের বাবা নতুন একটা কলিংবেল লাগালেন। কিন্তু সেদিন মধ্য রাতেও আগের মতো নতুন কলিংবেলটা বেজে উঠলো। কেউ বুঝতে পারছিলো না কলিংবেলের কী সমস্যা হয়েছে। তবে শুধু মাত্র একজনই বুঝেছিলো সবকিছু। সে হলো ফাহাদ। সে তার পরিবারকে জোরাজোরি করল বাসা পরিবর্তন করতে। অবশেষে ফাহাদের বাবা ফাহাদের কথায় রাজি হয়ে বাসা পাল্টালেন। তবে বাকী যে কয়দিন এ বাসায় ছিলেন, প্রতিদিন মধ্য রাতে কলিংবেলটা বেজে উঠতো।
ফাহাদরা বাসা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর থেকে সেই বাসার কলিংবেলটা মধ্যরাতে আর বেজে উঠে না। তবে ফাহাদের খোঁজে বিভিন্ন বাসায় মধ্যরাতে কেউ কলিংবেল বাজায়। এমনিভাবে একদিন মধ্যরাতে আপনাদের বাসার কলিংবেলটাও কিন্তু বেজে উঠতে পারে!
গল্প: কলিংবেল
লেখা: মাহদী শেখ
 
 
 
 
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন