শনিবার, ৯ জুন, ২০১৮

৫ম স্থান অধীকারীর গল্প

নাফিম উল আবীর

আমি কোন খুন করিনি

এক,
গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল: স্বামী মানে না বউ মোড়ল
ঘুঘু দেখেছো, ঘুঘুর ফাঁদ দেখোনি:বউ দেখেছো, বউয়ের শপিং দেখোনি
চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনি: বউ না শোনে স্বামীর কাহিনি
ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়: বউ বাছতে গাঁ উজাড়
বিশেষ প্রবাদ: লজ্জা নারীর ভূষণ,পুরুষের দূষণ
.
খাতাটা দেখার পর প্রথম যেই ভাবনাটা তাকে আঘাত করলো, সেটা হলো—এসব কী?
এই লোক নিশ্চয়ই পাগল, নইলে এতকিছু খাতায় লেখার কথা না। কয়েকটা প্রবাদ লেখা। তার পাশে লেখা সেসব প্রবাদের “আধুনিক” রূপ। সবগুলোই নারীকে নিয়ে লেখা প্রবাদ। 

না, এ লোক পাগল না। পাগল হলে কেউ রাতারাতি এতো টাকার মালিক হয়ে যায় না। এই লোক গভীর জলের মাছ। আরো ভালোভাবে বললে সাত ঘাটের পানি খাওয়া।
খুনি মুচকি হাসলো। তার হাতে এখনও খাতাটা ধরা। তার সামনে এখন মুখ থুবড়ে যে পড়ে আছে সে-ই খাতাটার মালিক। এবং এই নতুন প্রবাদগুলোও তারই লেখা।
লোকটা সম্ভবত রসিক, মনে-মনে বললো খুনি। মানুষ মুখে তার সেন্স অব হিউমার প্রকাশ করে, তিনি করেছেন লিখে। বউকে খুশি করার জন্য এ প্রবাদগুলো লিখেছেন। কিন্তু বউ এসব পড়ে খুশি হবে কি-না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে তার।
রক্তের একটা চিকন ধারা খুনির পায়ের কাছে ঠেকেছে। লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ালো খুনি। কোনোরকম প্রমাণ রাখা যাবে না। খুব সাবধানে সমস্ত প্রমাণ লোপাট করতে হবে। তবে একটা সূত্র সে রেখে যাবে। প্রতিটা খুনের সময়ই সে এই সূত্রটা ফেলে যায়। বাংলাদেশের গাধা ‍পুলিশরা তাকে আজ পর্যন্ত সন্দেহও করেনি। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড এলেও তাকে ধরতে পারতো কি-না সন্দেহ।
টিস্যু দিয়ে পা থেকে রক্ত মুছে ফেললো সে। গ্লাভসে রক্ত লেগে আছে। বাইরে গিয়েই এটা পুড়িয়ে ফেলতে হবে। অবশ্য গ্লাভসটা পাওয়া গেলেও কোনোকিছু করা যেতো না, কারণ সে এই গ্লাভসটার নিচেও আরেকটা গ্লাভস পরেছে। রক্ত লাগা গ্লাভসটা থেকেও ফিঙ্গারপ্রিন্ট বের করা সম্ভব নয়।
লাশটার দিকে এগোলো খুনি। আপাদমস্তক পরীক্ষা করলো খুনি। এই একটু আগেই, একটু আগেই লোকটা টেবিলে বসে নাইন-টেনের ব্যাকরণ বই পড়ছিলেন। প্রবাদ খুঁজে-খুঁজে বের করে সেসব নিয়ে বউ সম্পর্কিত প্রবাদ বানাচ্ছিলেন। আর মনে-মনে ভাবছিলেন, আজ বউকে কীভাবে ইমপ্রেস (!) করতে হবে।
কিন্তু একটা ছুরিই ছিল তাঁর প্রাণপাখি বেরিয়ে যাবার জন্য যথেষ্ট।
এই ছুরিটা হৃৎপিণ্ডে ঢুকলো, তারপর গেঁথে রইলো। ব্যস, কাজ শেষ। কত সহজ একজন মানুষের জীবন নেওয়া! এজন্যই হয়তো কালিদাস রায় বলেছিলেন, “বড়ই কঠিন জীবন দেওয়া যে জীবন নেওয়ার চেয়ে।”
খুনি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। এখন এসব ভেবে কোনো লাভ নেই। ভাবনার সময় পেরিয়ে গেছে বহু আগেই। যেই মিশন নিয়ে সে এগোচ্ছে, সেটা শেষ করতেই হবে।
লাশটার দিকে ঝুঁকলো সে। একটানে বের করে আনলো ছুরিটা। ছুরিটার গায়ে লেগে থাকা রক্ত দিয়ে মেঝেতে লিখলো—“A”। অদ্ভুত আর অস্পষ্ট হলো লেখাটা।
হাসিমুখে ছুরিটা নিয়ে বেরিয়ে গেলো সে।

দুই,
ওসি আবুল কাশেম চিন্তিতমুখে চেয়ারে বসে আছেন।
তাঁর টেবিলে ফাইলের স্তূপ জমে আছে। তবে এই সবক’টা ফাইলের মধ্যে তাঁকে আকর্ষণ করছে নীলরঙা একটা ফাইল।
হেলান দেয়ার ভঙ্গি হতে সোজা হয়ে বসলেন তিনি। শিরদাঁড়া টানটান করে নীল ফাইলটার ফিতা খুলতে লাগলেন।
পুলিশের আর অন্যান্য ‘ক্লোজ কেস’-এর মতো এটাও হয়তো ফাইলবন্দীই থাকতো চিরজীবন, কিন্তু একটা বিশেষ ঘটনা আবুল কাশেমকে ফাইলটা খুলতে বাধ্য করেছে।
পরপর চারটা খুন হয়েছে রাজধানীতে। এটা কোনো অদ্ভুত ব্যাপার নয়। যে দেশে খুনিরা ভিকটিমদের চোখের সামনে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়, সে দেশ থেকে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা বাতুলতা।
এদেশে প্রতিনিয়ত এসব ঘটছে। পুলিশরা এসব নিয়ে মাথা ঘামায় না, আমজনতা তো নয়ই। পুলিশরা শুধু খুনিদের কাছ থেকে নিজেদের ‘খোরপোশের’ টাকাটা পেলেই খুশি, প্রমাণ লোপাট করতে সময় লাগে না তাদের। আর ‘গোবরে পদ্মফুল’-এর মতো যে কয়টা সৎ অফিসার জন্ম নেয়, তারাও হারিয়ে যায় দ্রুতই। সত্যি কথা বলতে, সেসব মাথামোটা পুলিশরা হারিয়ে দেয় তাদেরকে।
আবুল কাশেম নিজের ওপর সামান্য বিরক্ত হলেন। এখানে বসে কল্পনায় রাজা-উজির মারলে কোনোই লাভ হবে না। ফাইলটা খুলতে হবে।
অনেক ধুলো জমে আছে ফাইলের ওপর। ফুঁ দিয়ে সেগুলো উড়িয়ে দিলেন তিনি। তারপর বিস্তারিত পড়তে শুরু করলেন।
চারমাসে চারটা খুন হয়েছে। প্রথম তিনজন ভিকটিম ছিল একেবারেই অগুরুত্বপূর্ণ, আমজনতা টাইপ মানুষ। তাদের আত্মীয়স্বজন কিছুদিন থানায় এসে হম্বিতম্বি করেছিল বটে, তবে সেসব ভালোভাবেই সামাল দেওয়া গেছে।
কিন্তু চতুর্থজনের কথা আলাদা। তিনি বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিল্পপতি আবদুল হাই। মুসা বিন শমশেরের পরেই নাকি তাঁর অবস্থান। সেই তিনিই কিনা খুন হয়ে গেলেন ভরদুপুরে!
খুনি খুবই চালাক। কোনোরকম প্রমাণ রেখে যায়নি। না কোনো ফিঙ্গারপ্রিন্টস, না অন্য কোনো কিছু। দু’একটা প্রমাণ হয়তো ছেড়ে গিয়েছিল, কিন্তু বাংলাদেশের পুলিশের যেই ছিরি, প্রমাণগুলো চোখেই পড়েনি!
সবচেয়ে বড় বিষয়, খুনি প্রতিবারই কোনো না কোনো অক্ষর লিখে যাচ্ছে মাটিতে। রক্ত দিয়ে। ফরেনসিক এক্সপার্টসরা বলছে রক্তটা ভিকটিমেরই।
চটজলদি এ পর্যন্ত পাওয়া হিসেবগুলো মিলিয়ে নিলেন তিনি:
১. প্রতিটা খুন হয়েছে দুপুর দুটো থেকে তিনটার মধ্যে;
২. প্রতিটা খুন ছুরি দিয়ে করা হয়েছে;
৩. প্রতিবারই খুনি কোনো না কোনো অক্ষর ছেড়ে গেছে। কোনোবার “M”, “E”, কোনোবার “S”...
উপরমহল থেকে প্রচুর চাপ আসছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে পুরো বিষয়টা দেখছেন। চাপের মুখে আবুল কাশেম নিজেও বলে ফেলেছেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিনি খুনিকে ধরে ফেলবেন।
এখন নিজের পশ্চাৎদেশে নিজেরই লাথি মারতে ইচ্ছে করছে। কী দরকার ছিল ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়ার?
এরই মধ্যে পুলিশের লিস্টে থাকা সমস্ত ক্রিমিনালদের লকআপে পুরে দিয়েছেন তিনি। বেশিরভাগই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা নাকি ভিকটিমদের দুই মাইলের ভেতর ‘মুতে’-ও নি। তবে কিছু এক্সট্রিম লেভেলের গাঁজাখোরেরা স্বীকার করেছে তারা এলিয়েনদের দিয়ে ভিকটিমদের খুন করিয়েছে।
যত্তসব বাকোয়াজ!
কোথা থেকে তিনি শুরু করবেন কিছুই বুঝতে পারছেন না। আরে বাবা, খুনিকে যদি চিনতেই না পারি, তাহলে কাকে ধরবো?
চিন্তাসূত্র বাধাগ্রস্ত হলো। ঝেড়ে কেশে কেউ বলল, ‘আসতে পারি?’
আবুল কাশেম মুখ তুলে তাকালেন। দরজায় বুট-কোট পরা কেতাদুরস্ত একজন দাঁড়িয়ে আছে। যুবক।
‘আসুন।’ অনুমতি দিলেন ওসি।
শ্যামবর্ণ যুবকটি অফিসে ঢুকল। সামান্য খুঁড়িয়ে হাঁটছে ছেলেটা। আশ্চর্য! ল্যাংড়া নাকি? ভাবলেন ওসি।
কনস্টেবলদের চাবুকের শব্দ আর জেলের আসামীদের আর্তনাদ নারকীয় করে তুলেছে পরিবেশটাকে। সেই সাথে যুক্ত হয়েছে আসামীদের প্রস্রাব-পায়খানার উৎকট গন্ধ। ওসির কাছে এটা গা-সওয়া হলেও যুবকটি এর সাথে পরিচিত নয়। ঘরে ঢুকেই নাক চেপে ধরলো সে।
‘বসুন,’ ভদ্রতার খাতিরে বললেন ওসি।
যুবকটি বসলো। তার হাতে অনেকগুলো ফাইল। কীসের, কে জানে!
‘অ্যাকচুয়েলি,’ যুবকটি কথা বলা শুরু করলো, ‘আমার নাম কবির হুসেইন।’
‘আমি আবুল কাশেম।’
করমর্দন করলেন দুজনে।
‘আমি আসলে ডিবির কর্মকর্তা।’
ডিবি!
চমকে উঠলেন ওসি। ডিবির লোক এখানে কী করছে?
‘আসলে...’ ইতস্তত করে গোমরটা ফাঁস করে দিলো কবির, ‘সেই চারটা খুনের ব্যাপারে আমি তদন্ত করছি। হাই প্রোফাইল কেস, বুঝতেই পারছেন...’
‘মানে পুলিশের কাছ থেকে কেসটা হ্যান্ডওভার করে ডিবিকে দিয়ে দেয়া হয়েছে?’
‘না। আমরা আসলে পুলিশের সহকারী হিসেবে কাজ করবো। অথবা বলতে পারেন আপনারাই আমাদের আপনারাই আমাদের সহকারী হিসেবে কাজ করবেন। হা হা হা।’
মাথা নেড়ে হাসিতে যোগ দিলেও আবুল কাশেম ভালো করেই জানেন দ্বিতীয় কথাটাই সত্যি। তিনি বললেন, ‘তো স্যার...কী খাবেন?’
‘কিছুই না। অফিস প্লাস স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে প্রচুর চাপ আসছে। নিঃশ্বাস নেওয়ারও সময় নেই। আপনি নিজেও ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে দিয়েছেন। এখন বলুন, তদন্ত কতদূর এগোলো।’
আবুল কাশেম বলা শুরু করলেন, ‘প্রতিটা খুন হয়েছে ছুরি দিয়ে, দুপুর দুটো থেকে তিনটার মধ্যে। প্রত্যেকবারই খুনি কোনো না কোনো অক্ষর লিখে গেছে...’
‘এসব আমি জানি।’ সশব্দে টেবিলে আঘাত করলো কবির, ‘অন্য কিছু বলুন।’
‘আর তো কিছুই জানি না...’ কাঁচুমাচু ভঙ্গিতে জবাব দিলেন আবুল কাশেম।
‘রাবিশ!’ স্বগতোক্তি করলো কবির, পরক্ষণেই খেয়াল করলো, তার চাইতে বয়স্ক কারো সামনে সে বসে আছে। ‘আমি ক্রাইম সিনে গেছিলাম, বুঝলেন! আমিও তেমন কিছুই পাইনি, এই রুমালটা ছাড়া।’
ওসির চোখের সামনে একটা রুমাল তুলে ধরলো সে। ‘রুমালটা ফরেনসিক টেস্টের জন্য পাঠিয়েছেন। ওরা ফেরত দিয়েছে। বলেছে খুব শিগগির রেজাল্ট আসবে। ...আচ্ছা বলুন তো, আপনারা এই রুমালটা পাননি কেন?’ প্রচ্ছন্ন বিদ্রুপের সুর তার গলায়।
মাথা নিচু করে রাখলেন ওসি।
‘ওকে, আমি উঠছি। হাতে বেশি সময় নেই। নতুন কিছু পেলে আমাকে জানাবেন।’
ঘাড় কাত করে সায় জানালেন ওসি। ঝড়ের বেগে অফিস ছেড়ে বেরিয়ে গেলো কবির।
স্বগতোক্তি করলেন ওসি, ‘চ্যাংড়া গোয়েন্দা!’

তিন,
আরো একটি খুন হলো।
নিঃশব্দে।
এবারও কেউ কিছুই জানতে পারলো না। দিনদুপুর খুন হয়ে গেলেন একজন। লাশটা ধরা পড়লো সন্ধ্যায়।
তবে এবারের হতভাগ্য একজন মহিলা। হোমরাচোমরা কেউ না হলেও মোটা ধনী। একটা কলেজের প্রফেসর।
লাশের পাশে দাঁড়িয়ে মুচকি হাসলো খুনি। তার মিশন কমপ্লিট। রাজধানীতে আর কোনো খুন হবে না। কারণ সে যেটা করতে চেয়েছিল, সেটা হয়ে গেছে। এখন শুধু এন্ডিংটা ঠিকঠাকভাবে করতে পারলেই হয়।
ছুরিটা তুলে নিলো সে। লাশের পাশে রক্ত দিয়ে সর্বশেষ অক্ষরটা লিখলো।
.....
ফোন নামিয়ে রাখলেন ওসি আবুল কাশেম। তাঁর বন্ধু লিংকন ফোন করেছিল। মহা বজ্জাত মানুষ লিংকন। অনেকদিন ধরেই ইঁদুর মারার আঠার মতো লেগে ওসি পিছে লেগে আছেন। চেষ্টা করেও লিংকনকে ছাড়াতে পারছেন না তিনি।
ফোন রেখে ঢকঢক করে পানি খেলেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেয়া ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ৩০ ঘণ্টা ইতিমধ্যেই শেষ। বাকি সময়টুকু কীভাবে পার করবেন সেটাই বুঝতে পারছেন না।
কাল দুপুরে আরো একটা ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে গেছে। আবারও আরেকটা খুন হয়েছে। খুনি আবারও আরেকটা অক্ষর লিখে গেছে।
‘টক অব দ্য কান্ট্রি’ এই পাঁচ হত্যা মামলা নিয়ে ফোনের পর ফোন আসছে ওসির কাছে। ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠেছেন ওসি। রাতে ফোন, সকালে ফোন, দুপুরে ফোন, ঘুমাতে গেলে ফোন; এমনকি বাথরুমে গেলেও ফোন! হঠাৎ হঠাৎ ভিআইপিদের বাসায় চলে আসা, সাথে সাংবাদিকদের অত্যাচার তো আছেই!
‘ওহ, রাবিশ!’ সজোরে টেবিলে মুঠি ছুঁড়লেন আবুল কাশেম।
‘কে রাবিশ, স্যার?’
কালকের মতো আবারও দরজায় দাঁড়িয়েছে কবির। কালকের পোশাকই পরনে। পার্থক্য শুধু মুখে। বিটকেলে একটা হাসি ঝুলে রয়েছে।
হাসি কেমন যেন মনে হলো। অশুভ?
কবিরকে দেখেই কণ্ঠস্বর নরম হয়ে এলো ওসির। ‘আরে আসুন, মিস্টার কবির, বসুন এখানে। আমি আপনারই অপেক্ষা করছিলাম। বলুন এবার, তদন্ত এগিয়েছে কদ্দূর।’
‘অনেকদূর।’ ঝকমকে সাদা দাঁত বের করে রেখেছে কবির। বসলো সে। ‘বলতে পারেন সফলতার কাছাকাছি চলে গেছি।’
‘তাই নাকি? গ্রেট!’ মুখে ‘গ্রেট’ বললেও মনে মনে ডিবির তরুণ কর্মকর্তার মুণ্ডুপাত করছেন তিনি। কোথাকার এক চ্যাংড়া ছেলে তাঁকে টেক্কা দিয়ে চলে গেলো!
‘শুনবেন না, কী পেয়েছি?’
‘হ্যাঁ-হ্যাঁ বলুন।’
পকেট থেকে সেই রুমালটা বের করলো কবির, যেটা সে কাল এনেছিল। নীল নকশা করা রুমালটা নাড়াতে-নাড়াতে সে বললো, ‘এই রুমালটা কার, আপনি জানেন?’
‘ন্-না-না তো!’ কথা জড়িয়ে গেলো ওসির।
‘আ...’ একটু ভাবলো কবির। ‘একটা বিষয় কী জানেন, আমি কিন্তু জানি রুমালটা কার।’
‘তো বলেই দিন না!’ মুখে কথাটা বললেও মনে-মনে ওসি বললেন, আর ঢঙ করিস না!
‘রুমালটা...আপনার।’
বিস্ময়ের ঠেলায় কিছুক্ষণ কথাই বলতে পারলেন না ওসি। তারপর চেঁচিয়ে উঠলেন, ‘হোয়াট! আমার! দেখি-দেখি রুমালটা!’
‘নো নো নো নো!’ রুমাল সরিয়ে নিলো কবির, কুকুরের মুখ থেকে যেমনভাবে খাবার সরিয়ে নেওয়া হয়। ‘রুমালটা দেয়া যাচ্ছে না।’
সন্তোষজনক একটা ব্যাখ্যা তৈরি করে আবুল কাশেম বললেন, ‘মনে হয় ক্রাইম সিনে তদন্তের সময় পড়ে গেছে পকেট থেকে।’
‘তাই নাকি? তাহলে আরেকটা কথা বলুন, ক্রাইম সিনে আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্টস পাওয়া গেলো কী করে? আপনি নিশ্চয়ই গ্লাভস না পরে ক্রাইম সিনে যাননি!’
‘গিয়েছিলাম তো!’ কথাটা বলেই জিভ কাটলেন ওসি, বুঝতে পারছেন নিজের কথা ফেঁসে গেছেন খুব ভালোভাবেই। দায়িত্বে অবহেলার জন্য চাকরিও যেতে পারে। ‘হয়তো...তদন্তের সময় গ্লাভস খুলে গেছিলো...তদন্তের সময় এরকম ছোটোখাটো ভুল তো হতেই পারে, তাই না? হে হে হে।’ নার্ভাস ভঙ্গিতে হাসলেন। ‘কিন্তু এসবের সাথে ক্রাইমগুলোর কী সম্পর্ক? আপনি এমনভাবে বলছেন যেন খুনগুলো আমিই করেছি!’
‘আচ্ছা ছাড়ুন এসব। এটা দেখুন।’ পকেট থেকে একটা কাগজ বের করলো কবির। ‘লাস্ট যে খুনটা হয়েছে, মানে পাঁচ নম্বর খুনটা, সেই ক্রাইম সিনেও তো আপনি একটা অক্ষর পেয়েছিলেন, তাই না?’
‘হ্যাঁ।’
‘অক্ষরটা কী ছিল?’
‘K।’
কাগজটা মেলে ধরলো কবির। ‘অদ্ভুত বিষয় হলো, প্রত্যেকটা খুনের পরই খুনি আলাদা-আলাদা অক্ষর লিখে গেছে। যেহেতু প্রতিবার ওয়ার্ডটা আলাদা, সেহেতু এটাকে খুনির নিজস্ব ব্র্যান্ড বা চিহ্ন বলার উপায় নেই। খুনি কোনো ধাঁধায় ফেলতে চাইছে সবাইকে। এবার দেখুন অক্ষরগুলো কী।
‘প্রথমবার অক্ষরটা ছিল M, দ্বিতীয়বার E, তৃতীয়বার S...কাগজটাতেই দেখুন।’
কাগজটার দিকে মনোযোগ দিলেন ওসি। খুনের সিরিয়াল অনুসারে অক্ষরগুলোকে সাজালে এমন হয়—
M-E-S-A-K।
‘এবার এটাকে উল্টে দিন।’
উল্টে দিতেই পাথরের মতো জমে গেলেন ওসি।
KASEM!
মুখ তুললেন আবুল কাশেম, দেখতে পেলেন, দুর্বোধ্য একটুকরো হাসি ঝুলছে তরুণ ইনভেস্টিগেটরের মুখে।

চার,
অক্ষম রাগে ফুঁসছেন আবুল কাশেম।
এছাড়া আর কী-ই-বা করতে পারেন তিনি?
পুরো জাতি তার বিরুদ্ধে চলে গেছে। গ্রামের চৌকিদার থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত বলছেন তিনিই খুনি! তিনিই সেই “ওয়ার্ড কিলার”! তিনিই খুন করেছেন সেই পাঁচজনকে! সাংবাদিকরা তো রঙচঙ মাখিয়ে বলে বেড়াচ্ছে, ‘আমরা শোকাহত! মর্মাহত! আমাদের রক্ষক পুলিশরাই আজ আমাদের ভক্ষক। তারাই এখন সাইকো হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে আপনার আমার চারপাশে। এ থেকে মুক্তি মিলবে কবে? কবে আমরা একটা মানসিক রোগমুক্ত সোনার বাংলা দেখতে পাবো?’
কিন্তু কেউ তাঁর কথা বিশ্বাসই করছে না!
তিনি খুনটা করেননি!
তিনি কেন খুন করবেন? খুনের জন্য প্রথমেই থাকতে হয় মোটিভ অব মার্ডার। সেটাই তো তাঁর নেই! তাহলে?
এই প্রশ্নের জবাব খুব তাড়াতাড়িই দিয়ে দিয়েছে কবির। এ মুহূর্তে তাকেই খুন করতে ইচ্ছে করছে ওসির। একটা গাঁজাখুরি প্রমাণ হাজির করে বলে দিচ্ছে তিনিই খুনি। এখন কোর্টের হাত থেকে যদি বাঁচাও যায়, পাবলিকের হাত থেকে বাঁচবেন কী করে?
কবিরের জবাবটা এরকম—আবুল কাশেমের কোনো মোটিভ যদি না-ও থাকতো, তবুও তাঁকে একজন সাইকো প্রমাণ করে খুনি প্রমাণ করা যেতো। কারণ একজন সাইকোর পক্ষে পাঁচজনকে খুন করা কোনো ব্যাপারই না।
কিন্তু আবুল কাশেমের মোটিভ আছে পাঁচজনের বিরুদ্ধেই!
কী সেটা?
প্রথম ভিকটিম ছিল আবুল কাশেমের মামাতো ভাইয়ের দূরসম্পর্কের আত্মীয়। দ্বিতীয়জনের সাথে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। তৃতীয়জন ছিল আবুল কাশেমের কলেজের সিনিয়র ছাত্র, যাকে তিনি কখনো চিনতেনই না! আর চতুর্থজন, অর্থাৎ শিল্পপতি আবদুল হাই আবুল কাশেমের মায়ের প্রাক্তন প্রেমিক ছিলেন। পঞ্চমজনের সঙ্গেও তাঁর কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায় নি।
‘তো? তাতে কী প্রমাণ হয়? সারা দুনিয়ার সাথে আমার সম্পর্ক থাকতে পারে, তা থেকে কি কখনো এটা প্রমাণ হয়, যে খুনটা আমিই করেছি?’ সঙ্গত প্রশ্নটাই ছুঁড়ে দিলেন তিনি।
কবির বললো, ‘এটা প্রমাণ করা খুব কঠিন কিছু না। ওদের সাথে আপনার ঝগড়া বা মনোমালিন্য ধরনের কিছু একটা দেখিয়ে দিলেই হবে। আর যাদের সাথে আপনার কোনো সম্পর্ক নেই, তারা হয়তো আপনাকে খুনটা করতে দেখেছে, এজন্য আপনি ওদেরকেও খালাস করে দিয়েছেন!’
নির্বাক হয়ে গেলেন আবুল কাশেম। একটা মিথ্যা মামলা সাজিয়ে ফাঁসানো হবে তাঁকে! কোনোমতে নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন, ‘আপনি এটা করতে পারবেন? মিথ্যা একটা ঘটনা সাজিয়ে...’ গলা ধরে এলো তাঁর।
‘কেন? আপনি করেননি?’ পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো কবির। ‘সততার বুলি ছেড়ে লাভ নেই, বুঝলেন? আপনি ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে যাচ্ছেন, কথাটা মাথায় ঢুকিয়ে রাখুন।’
‘আমি কেন নিজেকে ফাঁসানোর জন্য নিজের নাম লাশের পাশে লিখে যাবো?’ এবার শেষ একটা চেষ্টা করলেন তিনি।
‘কিছু-কিছু ক্রিমিনাল আছে, যারা এরকম করে। আর তাছাড়া শুধু আপনার রুমাল আর লেখাগুলো দিয়ে আমি আপনাকে দড়িতে ঝোলাতে পারতাম না। সেজন্যই আরকি একটু নাটক করতে হলো...বুঝলেনই তো...হে হে হে...চিন্তা করবেন না, আপনার বিরুদ্ধে আরো গাদা-গাদা প্রমাণ রেডি করা আছে। ভিকটিমদের দেয়া হুমকির আই উইটনেস, অমুক-তমুক...’
আবুল কাশেমকে হতাশার সাগরে ভাসিয়ে কবির চলে গেলো। সেই থেকেই রাগে ফুঁসছেন তিনি।
সেই সাথে হতাশায়ও।
একজন লইয়ারের সাথে কথা বলেছেন তিনি। লইয়ারও অস্বীকার করেছে কেসটা নিতে। সোজাসাপটা বলে দিয়েছে, ‘আপনার কেসটা আমি নিতে পারবো না। কোনো লইয়ারই নেবে না কেসটা, কেডি পাঠক ছাড়া।’
‘কেন?’
‘অ্যাট ফার্স্ট কেসটা খুব হাই-প্রোফাইল কেস। আর আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে ওরা একটা মিথ্যা মামলা সাজাচ্ছে। সত্য মামলার চাইতে মিথ্যা মামলা খুব দৃঢ় হয়। আমি এক্ষেত্রে কিছুই করতে পারবো না। আমি আরেকটা মিথ্যা ঘটনা সাজালেও কোনো লাভ নেই। সরি।’
এখন সত্যিই যদি কোনো কেডি পাঠক আসতো!
আমি এখন কী করবো? নিজেকেই প্রশ্নটা করলেন ওসি। আসলেই তো, কী করবেন তিনি?
মিনিট দুয়েক পরেই উত্তরটা পেয়ে গেলেন তিনি। তাঁকে কি করতে হবে সেটা তিনি ঠিক করে ফেলেছেন।
তাঁকে পালাতে হবে!

পাঁচ,
এটা তার নিজের ঘর। খুব পরিচিত এই ঘরটা। ঘরটার আনাচে-কানাচে তার নখদর্পণে। আর সে-ই কিনা নিজ ঘরে ভয় পাচ্ছে!
হ্যাঁ, প্রচণ্ড ভয় পাচ্ছে সে। ভয়ের চোটে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে বারবার। মনের একটা অংশ বারবার আকুতি জানাচ্ছে, ‘পান! পানি!’ আর অন্য অংশ ধমক দিচ্ছে, ‘নড়িস না! নড়লেই শেষ!’
একটা পিস্তলের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সে।
পিস্তলের নলটা থেকে ধোঁয়া বেরুচ্ছে। একটা গুলি লেগেছে লিংকনের পেছনের পেইন্টিংটাতে।
নিজ ঘরে অন্তরাত্মা কাঁপছে লিংকনের। এর আগে এমন পরিস্থিতিতে কখনোই পড়েনি।
পিস্তল হাতে আর কেউ নয়, দাঁড়িয়ে আছে তার বন্ধু—আবুল কাশেম!
‘কাশেম!’ অনেকক্ষণ পর এই একটা কথাই বলতে পারলো সে।
‘হ্যাঁ আমি।’ পিস্তলটায় ফুঁ দিলেন আবুল কাশেম, জেল ভেঙে পালিয়ে এসেছেন তিনি। পিস্তলটা লিংকনের, কেড়ে নিয়েছেন। হাতে খুব বেশি সময় নেই, যা করার এর মধ্যেই করতে হবে। ‘আমিই এসেছি।’
‘তো-তো-তোর হাতে পিস্তল কেন?’
‘পিস্তল মানুষ কেন রাখে, এটাও বুঝিস না? আচ্ছা যা অসুবিধা নেই। আমি বুঝিয়ে দিচ্ছি। পিস্তলটা আমি এনেছি একজনকে খুন করবো বলে। কাকে জানিস?’
“কাকে” জানলেও না-সূচক মাথা নাড়লো লিংকন।
‘তোকে।’
কথাটা আরেকবার লিংকনের বুক কাঁপিয়ে দিয়ে গেলো। কোনোমতে বললো, ‘ক্-ক্-কেন?’
‘কারণ...’ নাটকীয় ভঙ্গিতে কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন সদ্য জেল পালানো ওসি। ‘তোকে না মারলে আমি বাঁচবো না।’
‘মা-মা-মানে? আর তু-তুই-ই তো...ওই পা-পাঁচটা খুন করেছিস, না? তো-তোকে না পুলিশ ধরেছিল?’
‘সে কথাতেই তো আসছি। তোকে পুরো ব্যাপারটা খুলেই বলি। যেই পাঁচজন খুন হয়েছে, তাদের কারো সঙ্গেই আমার কোনোরকম আত্মীয়তা ছিল না...’
‘কিন্তু প্রথমজন তোর মামাতো ভাইয়ের দূরসম্পর্কের আত্মীয় ছিল...’
‘তুই জানলি কী করে?’ কথাটার মাঝখানে থামিয়ে দিলেন ওসি, ‘আমি তো তোকে আমার মামার কথাও কোনোদিন বলিনি। তোর তো এ ব্যাপারে কিছু জানারই কথা না। পুলিশ যেটা জেনেছে কিছুক্ষণ আগে, যেটা এখনও নিউজে আসেনি, সেটা তুই জানলি কী করে? এর একটাই উত্তর, পুরো প্ল্যানটা তোরই করা।’
‘কী-কী বলছিস কী তুই?’
‘চোপ!’ পিস্তলটা আবারও উঁচিয়ে ধরলেন ওসি, ‘তুই চুপ থাক্! আমার মৃত্যুতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হতি তুই। আমার গ্রামের বাড়ির কুড়ি কাঠা জমি, প্লাস আমার বউ শীলা, যার সঙ্গে তোর আবার লটরপটর আছে; সে তোর হয়ে যেতো। শুধু তাই নয়, আরো অনেক অ্যাডভান্টেজ পেতিস তুই, সেগুলোর কথা নাহয় বাদই দিলাম। এখন সেগুলো পেতে একটা জিনিসই করতে হবে—আমাকে সরাতে হবে। সেটা কীভাবে? আমাকে তো মারতে পারবি না, তাই বেছে-বেছে পাঁচজনকে মারলি, যাতে আমার জীবন আর ক্যারিয়ার; দুটোই শেষ হয়ে যায়।
‘আমার নাম লিখে দিয়ে এলি। পুরো কেসটা কবিরের হাতে ট্রান্সফার করার ব্যবস্থা করেছিলি। কী ভেবেছিলি, কবির যে তোর খালাতো ভাই, সেটা গোপন থাকবে?’
‘কোনো প্রমাণ আছে তোর কাছে? পারবি তুই এসব প্রমাণ করতে?’ মনে-মনে লিংকন পালাবার পথ খুঁজছে। জানে, আজ তার ডু অর ডাই। কী করবে সে? পালাবে? নাকি এগিয়ে গিয়ে হামলা করবে কাশেমের ওপর?
প্রশ্নটার জবাব যেন সঙ্গে-সঙ্গেই দিয়ে দিলেন আবুল কাশেম, ‘পালানোর চিন্তাও করিস না। ...হ্যাঁ, আমার কাছে কোনো প্রমাণ নেই। কিন্তু প্রমাণের কী দরকার? তুই খুনি, এটা জানাই কি যথেষ্ট নয় আমার কাছে?’
‘মা-মা-মা-মানে... তু-তু-ই তোর বন্ধুকে...আমাকে...খুন করবি!’
‘বাঁচতে চাস?’
কোনো জবাব দিলো না লিংকন।
‘জবাব দে, বাঁচতে চাস?’
ওপর নিচে মাথা নাড়ালো লিংকন।
‘তাহলে এই নে পিস্তল।’ পিস্তলটা লিংকনের দিকে ছুঁড়ে দিলেন তিনি। লিংকনের পায়ের কাছে এসে পড়লো সেটা। ‘নে। গুলি কর্ আমাকে। দেখি তোর কতো বুকের পাটা। পারলে গুলি কর্! তুই গুলি করতে পারলেই আমি বুঝে যাবো আমি গুলি করতে পারবো কি-না।’
সন্ধিগ্ধ দৃষ্টিতে পিস্তলটাকে জরিপ করছে লিংকন। দ্বিধায় পড়ে গেছে। তুলবে পিস্তলটা? নাকি...
ধ্যাত্তেরি! এতো কিছু ভাবলে চলে? একজন আহাম্মক যখন তাকে পিস্তল দিয়েছে, তখন আর দেরি কেন? ফুটো করে দাও ওকে!
পিস্তলটা তুললো সে। তাক করলো আবুল কাশেমের বুকে। টেনে দিলো ট্রিগার।
বাম বুক চেপে ধরে শুয়ে পড়লেন আবুল কাশেম। একচিলতে হাসি ঝুলছে তাঁর ঠোঁটে। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পেরেছেন তিনি।
আর কিছুক্ষণ পরই লিংকনকে বাঁচাতে পুলিশ আসবে। তাদেরকে তিনিই তো খবর দিয়েছেন, লিংকনকে তিনি মারতে যাচ্ছেন!
পেইন্টিংয়ের গুলিটা সবচেয়ে বড় প্রমাণ। সবাই মনে করবে লিংকনের সাথে ধস্তাধস্তির সময় পেইন্টিংয়ে গুলি লেগেছে। তাতে আরো ভালোভাবে ফেঁসে যাবে লিংকন। ওরা এলো বলে।
দরজায় বুটের ধাক্কা পড়ছে, ‘দরজা খুলুন, মিস্টার লিংকন! দরজা খুলুন!’
শেষনিশ্বাস ত্যাগ করার আগে আবুল কাশেমের শেষ কথাটা ছিল, ‘আমি কোনো খুন করিনি!’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নতুন লেখাগুলো পড়ুন...

      দুশ্চিন্তার চিকিৎসা   মূল: রশিদ আহমদ লুধিয়ানভি উর্দু: مفتی رشید احمد لدھیانوی ‎‎ জন্মঃ ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯২২ মৃত্যু...