সোমবার, ২৬ মার্চ, ২০১৮

মমতাময়ী মা

এম. ডি. হারুন



একটা ছোট্ট ভ্রুণ তেরী হয়, একটু একটু করে বেড়ে উঠে একটা মানুষের অস্তিত্বে। কি অদ্ভুত ব্যাপার!যতদিন এই ভ্রুণকে লালন করে একটি মেয়ে, স্বপ্নে বিভোর থাকে অনাগত এই অতিথির পৃথিবীতে আগমনের জন্য। সেই শিশু যখন তার মায়ের কাছে আসে, মা তাকে প্রথম দেখে সেই স্বর্গীয় দৃশ্যটা! সেই মুহূর্তটা কেউ কি কখনও কিছু দিয়ে প্রকাশ করতে পারবে? নাকি পারবে এমন
একটা স্বর্গীয় অনুভূতি কোন কিছুর বিনিময়ে কাউকে দিতে? আমি প্রায়ই আমার মাকে দেখে ভাবি, আমাকে যখন আমার মা প্রথম দেখলো, প্রথম কোলে নিলো, কেমন লেগেছিলো মাকে দেখতে? কেমন করে হেসেছিলো? একটু কি চোখের কোলে জল টলমল করেছিলো? জানা হবে না কখনও।
মা! মা! মা! পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর একটি শব্দ।সবকিছু জুড়ে থাকে মা। প্রতিটা নিশ্বাসের সাথে মায়ের অস্তিত্ব। এই আমি তো শুধু আমার মায়ের। মা আমাকে নিশ্বাস নিতে দিয়েছে। আমার অস্তিত্বকে অনুভব করতে দিয়েছে। মা জীবন জুড়ে থাকে। এবং বুক জুড়ে মা হয়ে ,মেয়ে হয়ে থাকে। মায়ের কাছে পৃথিবীতে সবচেয়ে প্রিয় হলো তার সন্তান। সবকিছুর বিনিময়ে মা তার সন্তানকে ভালো দেখতে চায়। আমার মায়ের বয়স আমার প্রায় দ্বিগুণ। প্রায়ই একটু অসুস্থ হয়। তখন পৃথিবীটা দুলতে থাকে চোখের সামনে। অকারণেই চোখ টলমল করে। ডাক্তারের দিকে করুণ চোখে তাকিয়ে থাকি আর আল্লাহকে ডাকি। বারবার বলি 'আল্লাহ তুমি বাবা-মাকে ভালো রাখো। কষ্ট দিও না।' কোন পাপের শাস্তিই যেনো পৃথিবী বাবা-মা শূণ্য না হয়। সেই ছোটবেলায় যেমন ছিলাম মায়ের কাছে এখনও যেনো সেই ছোট্ট মুনিই (বাবু) আছি।দেওবন্দের মাটিতে একা থাকি বলে বারবার ফোন করে জানতে চায় কোথায় আছি, কি করছি, খেয়েছি বললে, বলে- কি খেয়েছি! মাঝে মাঝে একটু কেমন লাগে, আবার সেই কেমন লাগার জন্য  মাঝে মাঝে অপরাধবোধ হয়। ভাবি, এমন করে আর কেউ তো সারাক্ষণ ভাববে না। জড়িয়ে ধরে রাজ্যের আদর নিয়ে চুমু দিবে না। ঘুমের মধ্যে এত মমতা দিয়ে মাথায়, গায়ে হাত বুলাবে না। কী মায়া! কী আদর! এসব ভাবলেই চোখ ভরে যায়। মায়ের কাছে সন্তানের জন্য কত মমতা! মায়ের স্পর্শে যে উষ্ণতা তা কি আর কোথাও আছে? যত দূরেই থাকুক না কেন মা ছুঁয়ে থাকে সারাক্ষণ। মায়ের মন থাকে, স্পর্শ থাকে, গায়ের গন্ধ থাকে প্রিয় সন্তানের কাছে। সন্তান বুড়ো হলেও মায়ের কাছে সে তার ছোট্ট মুনিই (বাবু) থেকে যায়। সেই মাকে ভালোবাসতে কোন দিবস লাগে না। মা তো অস্তিত্ব। আমার সোনা মা। আমার কলিজা। আর কিছু লিখতে পারবো না মা! মা তুমি থাকো সারাজীবন ধরে। সবার মা থাকুক তার প্রিয় সন্তানকে ছুঁয়ে। মাকে ভালোবাসি বেঁচে থাকার সাথে। সবচেয়ে প্রিয় সেই মুখটার হাসি অমলিন রাখুক সৃষ্টিকর্তা। সবার মায়ের জন্য বিনম্র শ্রদ্ধা, ভালোবাসা। প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ, প্রতিটা নিশ্বাসের সাথে। 

                          

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নতুন লেখাগুলো পড়ুন...

      দুশ্চিন্তার চিকিৎসা   মূল: রশিদ আহমদ লুধিয়ানভি উর্দু: مفتی رشید احمد لدھیانوی ‎‎ জন্মঃ ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯২২ মৃত্যু...