ফারজোয়ানা মুক্তাদের
|| মরা গাঙ্গের কোলে ||
ইফতারের একটু পরেই বাবুটা আমাদের ঘর আলো করে এল। এই বিপদে
বাড়িওয়ালা ও তার স্ত্রী সবরকমের সহযোগিতা করলেন। কোনরকম আত্মীয়তা ছাড়া মানুষ মানুষের জন্য করে। আর একবার প্রমান পেলাম। সকালে আম্মা এসে বাবু কে দেখে খুব খুশি হলেন আবার অভিমান ও করলেন, কেন আমরা উনাকে সঠিক কথা বলিনি। মা তো বেশিক্ষন রাগ বা অভিমার কোনটাই করে থাকতে পারলেন না। ঘন্টা খানিক পর আম্মা একটু আসছি বলে বেরিয়ে গেলেন। দুপুরের দিকে অইনুদা সহ একগাদা বাবুর জিনিষ সহ দোলনা নিয়ে হাজির। আমরা অবাক হলেও কোন কথা বললাম না। আম্মা আবার রাগ করলে অসুবিধা আছে। অনেক খাবারো সাথে এনেছেন। সুখদুঃখে জীবনের দিনগুলি কেটে যাচ্ছিল।
চার বৎসর পর ঢাকা থেকে সমুদ্র কন্যার দেশ কক্সবাজারে বদলি হয়ে এলাম। আমার ছোট বোন ইরিন তার বাচ্চাদের নিয়ে বেড়াতে এল। আমারা সবাই সমুদ্রের বিচে বেড়াতে এলাম। হটাৎ দেখি অইনুদা আমাদের দিকেই এগিয়ে আসছেন। আমার কর্তা মহাখুশি, উনি অইনুদাকে বিশেষ পছন্দ করেন। একা পেয়ে জানতে চাইলাম, ' অইনুদা আপনি ঢাকায় থাকার কথা এখানে কবে এলেন।' উনার সারা মুখ হাসিতে ভরে গেল আমার কথা শুনে, ' এসেছি কয়েক দিন হল, তোমাকে দেখার জন্য প্রতিদিন বিচে আসার মুখের দোকানটায় অপেক্ষা করি। তোমাকে ছাড়া সমুদ্র দেখা আর না দেখা সমান।' ' আবার আপনি পাগলামি শুরু করে দিয়েছেন।' ' তাতে তোমার তো কোন ক্ষতি হচ্ছেনা, আমার পাগলামি আমারই থাক।' এই বলে উনি আমার বাচ্চাদের নিয়ে মেতে উঠলেন। আমার কর্তা অইনুদার সাথে বাচ্চাদের বেশকিছু ছবি তুললেন ক্যামেরায়। কর্তা আমাকে ডাক দিলেন, ' রাহিন একটু এদিকে আস।' আমি কাছে এলে, 'অইনুদার সাথে বস, তোমার আর দাদার একটা ছবি নিব বাচ্চারা সহ।' কর্তা আমাদের ছবি তুললেন।
বাসায় ফিরার পর কর্তার কাছে জানতে চাইলাম, ' ইরিন আর ওর জামাই কি মনে করল বলত।' ' আমিত আছি ওরা আবার কি মনে করবে।' ' ছবি তোলার কি দরকার ছিল।' 'শুধু ছবিতে আছ জীবনে তো নেই। তুমিতো আমার তাই তোমাদের দুজনকে বাচ্চাসহ কেমন লাগে তাই দেখতে চাইছিলাম।' আমি কর্তার কথা শুনে চুপকরে গেলাম। তখনো বুঝিনি আমি অইনুদাকে ভালবাসি।
নদী বয়েচলে নিজের গতিতে, সময় গড়ায় নিজের নিয়মে। ভালই কেটে যাচ্ছিল দিনগুলি। আমার কর্তাকে অফিস থেকে সিডের উপর উচ্চতর ডিগ্রী নিতে দেশের বাইরে পাঠানো হল। আমি বাচ্চাদের নিয়ে আব্বার বাসায় এলাম থাকতে। কিছুদিন শশুর বাড়ি কিছুদিন বাবার বাড়ি এভাবেই চলছিল। এর মাঝে শুনলাম আইনুদা নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছেন। কোন একটা কোম্পানিতে বড়কর্তা হিসাবে যোগদিয়েছেন। উনার জন্য পাত্রীর খোঁজ চলছে। এই ভেবে শান্তি পাচ্ছিলাম যাক উনি বিয়ে করতে রাজি হয়েছেন।
(চলবে)
বাসায় ফিরার পর কর্তার কাছে জানতে চাইলাম, ' ইরিন আর ওর জামাই কি মনে করল বলত।' ' আমিত আছি ওরা আবার কি মনে করবে।' ' ছবি তোলার কি দরকার ছিল।' 'শুধু ছবিতে আছ জীবনে তো নেই। তুমিতো আমার তাই তোমাদের দুজনকে বাচ্চাসহ কেমন লাগে তাই দেখতে চাইছিলাম।' আমি কর্তার কথা শুনে চুপকরে গেলাম। তখনো বুঝিনি আমি অইনুদাকে ভালবাসি।
নদী বয়েচলে নিজের গতিতে, সময় গড়ায় নিজের নিয়মে। ভালই কেটে যাচ্ছিল দিনগুলি। আমার কর্তাকে অফিস থেকে সিডের উপর উচ্চতর ডিগ্রী নিতে দেশের বাইরে পাঠানো হল। আমি বাচ্চাদের নিয়ে আব্বার বাসায় এলাম থাকতে। কিছুদিন শশুর বাড়ি কিছুদিন বাবার বাড়ি এভাবেই চলছিল। এর মাঝে শুনলাম আইনুদা নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছেন। কোন একটা কোম্পানিতে বড়কর্তা হিসাবে যোগদিয়েছেন। উনার জন্য পাত্রীর খোঁজ চলছে। এই ভেবে শান্তি পাচ্ছিলাম যাক উনি বিয়ে করতে রাজি হয়েছেন।
(চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন